NRC কোপে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি, কাটখড় পুড়িয়ে গঙ্গাধর ফিরল ঘরে

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অসমে পাড়ি দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের গঙ্গাধর প্রামানিক। কিন্তু কাজ নয়, জুটেছিল কারাবাস! মাত্র ১৬ বছর বয়সে…

Gangadhar Pramanik

short-samachar

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অসমে পাড়ি দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের গঙ্গাধর প্রামানিক। কিন্তু কাজ নয়, জুটেছিল কারাবাস! মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাড়ি থেকে অসমে পাড়ি দেওয়ায় সঙ্গে ছিলনা ভোটার কার্ড সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ফলে ২০১৭ সালে অসম সীমান্ত শাখার পুলিশ বাংলাদেশী সন্দেহে গঙ্গাধরকে গ্রেফতার করে। পরে ঐ বছরেরই ১২ ডিসেম্বর থেকে আদালতের নির্দেশে ‘গোয়ালপাড়া ডিটেনশান ক্যাম্পে’ বন্দী জীবন কাটায় রাধানগর গ্রামের এই যুবক।

   

এই অবস্থায় বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। দীর্ঘদিন ছেলের খবর না পেয়ে গঙ্গাধরের বৃদ্ধা মা ভারতী প্রামানিক ধরেই নিয়েছিলেন ‘ছেলে আর বেঁচে নেই’। এই অবস্থায় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় আসামের সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যাণ্ড পিসে’র সদস্যরা। ঐ ডিটেনশান ক্যাম্প থেকে মুক্তি পাওয়া দুই আবাসিকের কাছে গঙ্গাধরের খবর পেয়ে দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে ‘ঘরের ছেলেকে ঘরে’ ফিরিয়ে দিলেন তাঁরা। বুধবারই ঐ সংস্থার প্রতিনিধিরা গঙ্গাধর প্রামানিককে তার রাধানগরের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন।

১৪ বছর আগে বাড়ি থেকে কাজে খোঁজে বেরোনোর সময় মা, বাবা আর ছোটো বোনকে রেখে গেলেও জনমজুর বাবা মন্টু প্রামানিক আর নেই। কয়েক বছর আগেই বোনেরও বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে অসহায় বৃদ্ধা মা একাই থাকতেন। এক যুগ আগে ‘হারিয়ে যাওয়া’ ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি তিনি।